মন ছুঁয়ে যায় - কামাল কাদের

 

চৈতালি এবং কাকলী দুই সহোদর বোন। বাবা-মার  সাথে পূর্ব লন্ডনে থাকে। ইংল্যান্ডে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। চৈতালি সদ্য লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক পাস্ করে একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে "গ্রাজুয়েট ট্রেইনী" হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে। চাকরীতে যোগ দেবার আগে ইউরোপের কোনো এক দেশে ঝটিকা সফর করার আগ্রহ জাগলো। সেই সাথে ছোট বোন কাকলীকে তার  সফরের সাথী হবার প্রস্তাব করলো। কাকলী এক কথায় রাজী। কাকলী এ-লেভেল রিজাল্টের অপেক্ষায় আছে। মাস খানিক পর রিজাল্ট বের হবে। এদিকে মেয়ে দুটি একসাথে ভ্রমনে বের হবে জেনে তাদের মা-বাবা অনেকটা চিন্তামুক্ত হলো এই ভেবে যে ,বিদেশে কোনো বিপদ -আপদ হলে একজন  আরেকজনকে  দেখে শুনে রাখতে পারবে।  

ইন্টারনেটে  খোঁজাখুঁজির পর পূর্তগালের রাজধানী লিসবন শহরে  ৫ দিন সফরের একটা ভালো অফার পেয়ে গেলো। বেশ ,আর কি ? ঝট-পট করে ভ্রমণের  তারিখ ঠিক করে টিকেট কিনে ফেললো। নির্ধারীত দিনে তারা লন্ডন থেকে বিকেল বেলায় লিসবনে পৌঁছালো। এয়ারপোর্ট থেকে একটা ট্যাক্সি  নিয়ে সোজা হোটেলে। হোটেলে পৌঁছে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে লন্ডনে বাবা-মাকে ফোন করতে যেয়ে দেখলো ,মোবাইল ফোন চার্জ করার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে যে " two  point plug "   প্রয়োজন সেটা ভুলে সাথে করে নিয়ে আসা হয়নি। বিরাট এক সমস্যায় পড়ে গেলো। হোটেলে রিসেপ্শনে গিয়ে তাদের এই সমস্যার কথা জানালো। রিসেপশনিস্ট  অতি অমায়িক ভাবে  জানালো যে ,তার জানামতে আসে পাশে এমন কোনো  জানা- শুনা দোকান নেই  যেখানে two point plug  পাওয়া যেতে পারে।  কথাটি শুনে চৈতালি এবং কাকলি অত্যান্ত  আশাহত  হলো । হোটেলের পাশেই ছোট্ট  একটা সুভেনিয়েরের  দোকান   চোখে পড়লো। সামনে এগিয়ে দেখলো ভিতরে দু 'জন কর্মচারী। দেখে মনে হলো ইন্ডিয়ান। দু 'জনই দেখতে চটপটে এবং সুবেশধারী। তবে সামনে দাঁড়ানো যুবকটি অন্য যুবকটির চাইতে বেশ সুদর্শন। 

চৈতালি সামনে দাঁড়ানো যুবককে ইংরেজীতে বললো ,"আমরা দু 'বোন ইংল্যান্ড থেকে এখানে বেড়াতে এসেছি ,সাথে করে ইউরোপিয়ান দেশে ব্যবহার করার মতো two point plug  আনতে ভুলে গেছি ,আপনারা কি বলতে পারেন কোথায় two point  plug  পাওয়া যেতে পারে  ?  আমরা সত্যিই ভীষণ সমস্যায় পরে গেছি "।   যুবকটি মৃদু হেসে  ইংরেজীতে জানালো ," অরে ম্যাডাম , এটা কোনো  সমস্যাই না ,আমাদের দোকানেই two point plug  রয়েছে ।  " আমাদের বাঁচালেন ভাই ," চৈতালি হাঁফছেড়ে  বললো। তারপর জিজ্ঞাসা করলো ," কত দাম দিতে হবে ?

- ' ছয় ইউরো ' , পিছনে কাউন্টারে বসা যুবকটি দাম জানালো।

দাম শুনে কাকলী বাংলাতে চৈতালিকে বললো ," বুবু ,ইংল্যান্ডের চাইতে মনে হয় দাম বেশী চাইছে।

-ওসব কথা বাদ দে, পেয়েছি এই তো যথেষ্ট।

ওদের দু'জনার বাংলায় কথাবার্তা শুনে  সামনে দাঁড়ানো যুবকটি অবাক হয়ে বললো , " ম্যাডাম, আপনারা বাঙালি ,আমরা তো ভেবেছিলাম আপনারা অবাঙ্গালী ইন্ডিয়ান "।  কথাটি শুনে চৈতালিও বললো ," আমরাও ভেবেছিলাম আপনারাও অবাঙালি ইন্ডিয়ান। " তারপর সবাই মিলে   হাসিতে একাকার !

- যদি কিছু মনে না করেন ,আপনারা কি বাংলাদেশ থেকে এখানে বেড়াতে এসেছেন ?

- আমরা ইংল্যান্ড থেকে এসেছি ,আমাদের মা- বাবারা বাংলাদেশী আর আমরা ছোট বেলা থেকে ইংল্যান্ডে বেড়ে  উঠেছি।

একটু জড়তা নিয়ে প্রথম যুবকটি বললো ," আমার নাম বিভাস ,চেনা জানা সবাই আমাকে  "বিভু" বলে ডাকে।  কোনো কিছুর প্রয়োজন  হলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা দু'জনে বাংলাদেশের লোক।  আমাদের মনিব একজন বিত্তশালী ইন্ডিয়ান। উনার এ দেশে  এ রকম কয়েকটি দোকান রয়েছে। কথাগুলি বলে বিভু পিছনের দিকে মুখ ঘুড়িয়ে কাউন্টারে বসা যুবকটিকে বললো ,"  "মুকুল দেশের লোক , 'এক ইউরো ', কমিয়ে দাও। তারপর চৈতালির দিকে তাকিয়ে একটু বিনয়ের সুরে বললো ," ম্যাডাম আমরা দোকানের মালিক হলে আরো দাম কমিয়ে দিতে পারতাম "।

-না না ,কেন আপনারা অনর্থক নিজেদেরকে অপরাধী ভাবছেন। আপনারা আমাদেরকে যা উপকার করলেন তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।

সেদিন এ ভাবেই একে  অপরের সাথে পরিচয় পর্ব শেষ করে বিদায় নিলো।  

দুদিন পর সকালে  চৈতালি এবং কাকলীর সাথে বিভুর দেখা হলো দোকানের সামনে। বিভু  তাদেরকে দেখতে পেয়ে হাসি মুখে জিজ্ঞাসা করলো ," ম্যাডাম ,  লিসবন শহর ভ্রমণ কেমন  লাগছে ?"

-খুবই সুন্দর শহর। গতকাল গিয়েছিলাম এক বিখ্যাত প্রাচীন গির্জা দেখতে। গির্জার নামটি শুনে বিভু জানালো ," হাঁ, ওটা একটি ঐতিহাসিক গির্জা , যা 'ইউনাইটেড নেশন ' দ্বারা স্বীকৃত "।  

- শুক্রবার দিন আমরা ইংল্যান্ডে ফিরে যাচ্ছি ,ভাবছি আর কোথায়ও  ঘুরাঘুরি  করা যায় কিনা।

- ম্যাডাম , সাগরের প্রতি আপনার কোনো আকর্ষণ আছে কি ?

- আরে ,আমাকে ম্যাডাম ,ম্যাডাম করে সম্বোধন করছেন কেন ? আমার নাম চৈতালি ,চৈতালি বলে  ডাকলে বরং আমি খুশি হবো।

- বেশ ,তবে তাই হবে। এখন বলুন যাবেন কি সাগর দর্শনে ? পরশু আমার ছুটির দিন। রাজী থাকলে এখানকার  এক নামকরা সমুদ্র সৈকতে আপনারদেরকে নিয়ে যেতে পারি। আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলের বাণিজ্যিক শহর। নাম তার " kash -kay  " লিসবন থেকে প্রায় ১৯ মাইল দূরে। প্রাকৃতিক সৌন্দের্য্যে ভরপুর। নিরাশ হবেন না।  

- বলেন কি ! নিশ্চয় যাবো , এমন সুযোগ কি সব সময়ে আসবে ?

- তাহলে আর দেরী কেন ! কথা রইলো ,পরশু সকাল নয়টায় এই হোটেলের সামনে দেখা হবে।

 কথামতো সকাল নয়টায় সবাই মিলে বেড়িয়ে পড়লো সাগর দর্শন করতে। প্রথমে পাতাল ট্রেনে, পরে ওভারগ্রউন্ড ট্রেন ধরে santry  নাম এক শহরতলিতে এসে পৌছালো।এই শহরটিতে রাজপ্রাসাদ রয়েছে। সেখান থেকে  ঘন্টাখানিক ঘুরা ফেরা করে   অন্যাণ্য  যাত্রীদের সাথে   'kash  kay  ' সামুদ্রিক শহরের উদ্দেশে  রওয়ানা  হলো ।

যখন শহরটিতে তারা পৌছালো তখন শহরটির অপূর্ব সৌন্দর্য দেখে চৈতালি এবং কাকলী বাক হারা, মনে হলো কোনো এক স্বপ্ন রাজ্যে এসে পড়েছে। দূরে নানাধরনের জাহাজের আনাগোনা চলছে ,সাগর জলে কেউ  সার্ফিং করছে ,সাগর সৈকতের আসে পাশে একদল লোক গল্ফ খেলছে ,আবার অনেকেই সাগর সৈকতে হাটা হাটি , ছুটা ছুটি ,খেলাধূলা করছে।

এরই মাঝে দুপুরের খাওয়ার সময় ঘনিয়ে এলো। কাছেই নানা রকমের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে সমুদ্রের তাজা মাছ ভাজা আর তার সাথে 'পটেটো চিপস ' খেয়ে নিলো। খাওয়া শেষ করে চৈতালি বিভাসকে বললো ," চলুন মিস্টার বিভাস , সাগর সৈকতে কিছুক্ষন বেড়িয়ে  আসা যাক  ।  এতো সুন্দর পরিস্কার রুপালি বালিতে হাটতে মন  চাইছে "।

বিভাস তো এ ব্যাপারে এক পায়ে খাঁড়া,বললো " নিশ্চয় " ।

দুজনেই সাগরের হাটু জলে নেমে পড়লো। পাশা পাশি হাটছে।তার সাথে  নিজেদের মাঝে কথাবার্তা চলছে। এক পর্যায়ে চৈতালি প্রশ্ন করলো ," মিস্টার বিভাস , আপনি তো পূর্তগালে অনেক দিন ধরে আছেন ,তাই না ?

- হাঁ, তিন বছরের উপরে।

-আপনাকে দেখে শিক্ষিত মনে হয়। এই দোকানে কাজ করে সংসার পোষণ কি করে ?

-  "সংসার বলতে তেমন কিছু হয়নি ,অর্থাৎ এখনো বিয়ে করিনি ,তবে দেশে বৃদ্ধ বাবা -মা এবং

ছোট বোনদের সংসার খরচের জন্য আমাকে টাকা পাঠাতে হয়। আর হাঁ ,আপনি ঠিকই অনুমান

করেছেন এই দোকানে কাজ করে আমার পোষায় না। আমাকে অতিরিক্ত একটা খণ্ডকালীন কাজ করতে হয়। কাজটি হলো সিকিউরিটি  গার্ড , বেতন অসম্ভব ভালো।  কোম্পানির  প্রয়জোন অনুযায়ী নানা জায়গায় assingment  দিয়ে দেয়। সেই মোতাবেক সন্ধাবেলায় সেখানে হাজির হয়ে যাই। কিছুক্ষন জেগে পাহারা দিয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়ি। ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে সটান বাসায় চলে আসি।  প্রথম প্রথম চাকরীটা করতে যেয়ে ভয় লাগতো  ,এই বুঝি দুর্বৃত্তরা এসে আমাকে মেরে ফেললো ,এখন আর সে ভয় আর নেই। আস্তে আস্তে ভয় উদাও হয়ে গেছে "।

কিছুক্ষন নীরব থেকে বললো , " বিলেত থেকে একটা ডিগ্রী নেয়া আমার ছোট বেলার স্বপ্ন। জানিনা ভাগ্যে কি আছে। এখানকার সরকারীভাবে স্থায়ী থাকার অনুমতিটা হয়ে গেলেই বিলেতে

চলে যাবো " ।

- তাহলে আমার ধারণাটি  ঠিকই। আপনি একজন শিক্ষিত ,বুদ্ধিমান যুবক।

- তা বলতে পারেন।  আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে এম ,এ, পাস করেছি , কিন্তু এ সমস্ত ডিগ্রীর এখানে  কোনো মূল্য নেই। টেকনিক্যাল মানে কারিগরী কাজের এখানে অনেক চাহিদা।  

- তা সত্যি !

ইতিমধ্যেই পশ্চিম গগনে সূর্যের রক্তিম আলো মন্থর গতিতে সাগরের অতল জলে ডুবু ডুবু করছে,তারই সাথে পৃথিবীটাও অন্ধকারে নিম্মজিত হয় আসছে। এই সুন্দর আনন্দঘন পরিবেশটা

হুট্ করে চলে গেলো , দুজনেরই ভাবতে অবাক লাগছে। সেদিনকার মতো সাগর দর্শন  শেষ করে লিসবন ফেরার কোচে উঠে পড়লো।

আজ বৃহস্পতিবার ,আগামীকাল চৈতালি এবং কাকলী তাদের পূর্তগাল সফর শেষে ইংল্যান্ডে ফিরে যাবে। আগে থেকে হোটেল রেসেপিটানিস্ট নিকোলাকে দিয়ে একটা ট্যাক্সি রিজার্ভ  করে রেখেছে। এই দিনটি ওরা রাজধানী শহরটিতে নানা দর্শনীয় স্থানগুলিতে খুব করে ঘুরে বেড়াল।

 শুক্রবার দিন  সকাল বেলায়  বিভাস  এবং মুকুলের কাছ থেকে বিদায় নিতে ওদের দোকানে হাজির।বিভাস দোকানের প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে ছিল। দু 'বোনকে দোকানের সামনে আসতে দেখে বিভাসই  আগ বাড়িয়ে ' শুভ সকাল ' জানিয়ে জিজ্ঞাসা করলো , " আজ বিকেলেই তো আপনারা ইংলেন্ডে চলে যাচ্ছেন  " ?   এয়ারপোর্টে কি ভাবে যাচ্ছেন ?

- একটা ট্যাক্সি রিজার্ভ করে রেখেছি।

 কথাটি শুনে বিভাস  বললো , "  আরে  আপনারা ট্যাক্সিতে যাচ্ছেন কেন ?  uber এ যান ,uber এর ভাড়া ট্যাক্সির চাইতে অনেক কম।

- কিন্তু যতদূর জানি ,uber গাড়ী ব্যবহার করতে হলে ওদের সাথে একাউন্ট থাকতে হয় ,যা আমাদের নেই। আমরা ইংল্যান্ডে নিজেদের গাড়ী ব্যবহার করি।

- তা আপনাদের ভাবতে হবে না। কত ভাড়ায় আপনারা ট্যাক্সি রিজার্ভ করেছেন ?

- ' ত্রিশ ইউরো '

- আমি এক্ষুনি আপনাদের জন্য uber রিজার্ভ করে দিচ্ছি।

 বিভাস  ফোন করে  uber  চালকের কাছ থেকে জানতে পারলো হোটেল ফ্লামিংগো থেকে এয়ারপোর্টের ভাড়া পড়বে ' আঠারো ইউরো '।

কথাটি শুনে চৈতালি  এবং কাকলী অবাক হয়ে গেলো। আর কি ! বিভাস ওদের হয়ে uber রিজার্ভ

করে ফেললো এবং সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব নির্ধারীত ট্যাক্সি রিজারভেশন বাতিল করে দিলো।  

চৈতালি তার হাত ব্যাগ থেকে একটা  ' বিশ ইউরোর ' নোট বের করে ওর মোবাইল নাম্বারটা লিখে বিভাসের হাতে দিয়ে বললো , " নোটটার মধ্যে আমার মোবাইল নাম্বার আছে "।  তারপর একটু লজ্জিত হয়ে জানালো ," মিস্টার বিভাস ,এ জীবনে আজ পর্যন্ত আপনার মতো এমন যত্নশীল লোক এখনো চোখে পড়েনি।  আপনি অন্যের প্রতি এতো খেয়াল রাখেন ,তা ভাবতে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি "।  

বিভাস কিছুটা বিব্রতবোধ করে বললো , " আপনারা দেশের লোক ,তাই যতটুকু সম্ভব আপনাদের সাথে থেকে আমার এই একাকিত্ব জীবনের কিছুটা সময় কাটিয়ে দিতে পেরেছি ,এতেই  আমি খুশি "।

- যাই হোক ,  আমাকে ইংলেন্ডে ফোন করবেন।

- তা করা যাবে ক্ষন  ! আগেই বলেছি , ইংল্যান্ড থেকে একটা ডিগ্রি নেয়া আমার শৈশবের সাধনা। নিম্ন বিত্তের ঘরে জন্মেছি ,তাই অনেক সময় মনে হয় এ ভাবনা দুরাশা ছাড়া আর কিছু নয়। তবুও চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবোনা।  

- নিশ্চয় ,চেষ্টা করে যাবেন। আমি আপনার ইংল্যান্ডের আসার পথ চেয়ে থাকবো। আপনার নির্ভেজাল আন্তরিকতায় আমার হৃদয় স্পর্শ করেছে।

- ধন্যবাদ।

কথা শেষে দু'বোন হোটেলের দিকে হাটা দিলো।  বিভাস তাদের যাওয়ার পথে আনমনে  তাকিয়ে রইলো।

                                                      ০০০-শেষ-০০০