দ্যা মোমেন্ট অফ ভিক্টরি – ও. হেনরী

দ্যা মোমেন্ট অফ ভিক্টরি – ও. হেনরী

বেন গ্রেঞ্জারের (Ben Granger) বয়স উনত্রিশ, মেক্সিকো উপসাগরের (Gulf of Mexico) তীরবর্তী ছোট শহর কাডিজ (Cadiz) এর একজন বড় ব্যবসায়ী ও পোস্টমাস্টার, তাছাড়া সব থেকে বড় কথা একজন যুদ্ধ বিশারদ। তার থেকেই যুদ্ধের নমুনাটা জানা যাবে।

একদিন সন্ধ্যায় চাঁদের আলোয় আমরা দুজন তার বাক্স প্যাটরার ওপর বসেছিলাম। এক সময় প্রশ্ন করল, আচ্ছা কিসের জন্য নানান বিপদ, অগ্নিকাণ্ড, গোলযোগ, অনাহার, দূর্ভিক্ষ এই সব বিপদের মধ্যে মানুষ ঢুকে যায়? কেন এসব কাজ করে? কিসের জন্য অন্য সব মানুষকে ছাড়িয়ে যেতে চায়? এমন কী যারা তার থেকে বেশী সাহসী, বেশী শক্তিশালী তাদের থেকেও তার ইচ্ছেটা কী, কী আশা করে এর থেকে? শুধু ভোলা হাওয়া ও অনুশীলনের জন্য তো এসব করে না। আচ্ছা বিল, যখন একজন সাধারণ মানুষ সাধারণতঃ হাটে বাজারে, বক্তৃতামঞ্চে, শিক্ষায়তনে, রণক্ষেত্রে, বনপথে এবং পৃথিবীর সভ্য ও অসভ্য দেশের নানা কর্মক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্খা ও অসাধারণ ঠেলাঠেলির চেষ্টা চালায় তখন তার কি প্রত্যাশা থাকা উচিত?

আমি বেশ ভেবেচিন্তে বললাম-“দেখ বেন যে মানুষ খ্যাতির পিছনে ছোটে তাদের উদ্দেশ্যকে সহজেই তিন ভাগ করতে পারি। উচ্চাকাঙ্ক্ষা – যেটা জনমর্থন লাভের ইচ্ছা, লোভ – যার দৃষ্টি সাফল্যের বাস্তবের দিকে। আর কোন নারীর প্রতি ভালবাসা – যাকে সে পেয়েছে বা পেতে চায়।

বেন কথাটা শুনে ভাবতে লাগল। সে বলল তোমার কথাগুলি অক্ষরিক অর্থে ঠিক কিন্তু আমি বলছিলাম একটি বিশিষ্ট মানুষ উইলি রবিন্স-এর (Willie Robbins) কথা। এক সময়ে সে আমার পরিচিত ছিল। তোমার যদি শুনতে আপত্তি না থাকে তো তার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই আমি।।

“স্যান অগস্টিন-এ (San Augustine) উইলি ছিল আমাদের বন্ধুমহলের একজন। সেই সময় আমি শুকনো খাবার ও ভুষিমালের পাইকারী ব্যবসায়ী ব্রাডি ও মার্চিসন (Brady & Murchison) কোম্পানীর কেরানি ছিলাম। উইলি ও আমি একই ক্লাবে, ক্রীড়া সমিতি ও সামরিক সঙেঘর সভ্য ছিলাম যে কোন হৈ হুল্লোড় করার ব্যাপারে সে ছিল ভীষণ উদ্যোগী।

আগে তার একটা বর্ণনা দিই। তারপর গল্প শুরু করব। গায়ের রঙ ও চালচলনে একটু ককেসিয়ান ছোঁয়া ছিল। চুল নানা রঙে মেশান, চোখ লীল আর কথাবার্তা কাটাকাটা। তার সঙ্গে কখনও কোন বিরোধ ছিল না। সব কিছুই মানিয়ে নিতে পারত।

এই উইলি মিরা এলিসনকে (Myra Allison) দেখে একেবারে বিগলিত চিত্ত। গোটা অগাস্টিন-এ মিরা ছিল প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল, কুশলী ও সুন্দরী মেয়ে। সে ছিল কাজল নয়না, উজ্জ্বল কেশিনী আর একান্ত মনোহরিনী তবে মনে করো না আমি তার প্রেমে পড়েছি। হয়তো পড়তাম কিন্তু বুঝতে পেরে সরে পরেছিলাম।

একদিন রাত্রে মিসেস কর্ণেল স্প্যাগিন্স-এর বাড়ীতে আইসক্রীম পার্টি (Mrs. Colonel Spraggins) ছিল। উপরের বড় ঘরে ছিল সাজাগোজের ব্যবস্থা। কিছুটা নীচে হলঘরে মেয়েদের প্রসাধনী কক্ষ। এক তলায় নাচের আসর।

এক সময় উইলি রবিন্স ও আমি যখন সাজঘরে ছিলাম, তখনই এলিসন কোথা থেকে সেখানে এল। উইলি তখন আয়নার সামনে চুলগুলো ঠিক করছিল। খামখেয়ালি মিরা হঠাৎ বলে উঠল-

–হ্যালো উইলি! আয়নার সামনে কি করছ?

উইলি–‘প্রজাপতি হবার চেষ্টা করছি।’

প্রাণখোলা হাসি হেসে মিরা বলল- দেখ, তুমি কোনদিন প্রজাপতি হতে পারবে না।

মিরা চলে যেতে দেখি উইলির মুখটা ফ্যাকাশে। বুঝলাম খুব মনে লেগেছে। মিরা দোষের কিছু না বললেও উইলি এত ভেঙে পড়েছিল যে বলবার নয়। সে রাতে উইলি একবারও মিরার কাছে গেল না।

পরিদন যুদ্ধ জাহাজ ‘মেইন’ কে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হল। তার পরে জো বেইলি বা বেন টিলম্যান বা সরকারও হতে পারে স্পেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল।

আসলে কি জান, ম্যাসন ও হ্যামলিন রেখার দক্ষিণ অঞ্চলের সবাই জানে যে উত্তর অঞ্চল একাকি স্পেনের মত এত বড় একটা দেশের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না। সুতরাং ইয়াংকিরা সাহায্যের জন্য আবেদন জানাল। জনি রেবস (Johnny Rebs) রাজি হল। তারা জানাল আমরা আসছি লক্ষ লক্ষ লোক নিয়ে।

এরপর আমরা অবিভক্ত এক দেশ হয়ে পড়লাম। আমাদের সৈন্যরাই প্রথম কিউবাতে নামল। সে যুদ্ধের পুরো ইতিহাস তোমাকে বলছি না।

যদি কখনও কাউকে বীর জ্বরে (heroitis) ধরে থাকে তবে সে উইলি রবিন্স। ক্যাস্টিল-এর অত্যাচারীদের মাটিতে পা দেবার মুহুর্ত থেকে সে যেন বিপদ সমুদ্রে ঝাপ দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠল। সবাই তাকে দেখে অবাক হয়ে গেল। সে কিন্তু বিপদ বরণের মধ্য দিয়ে কর্ণেলের আর্দালি বা কমিসারির টাইপ রাইটারের পদের দিকে গেল না। সে সৃষ্টি করল এক বালক বীর-এর ভূমিকা।

বীর মেতে উঠেছে রক্তপাত, জয়ের মালা, উচ্চকাঙক্ষা, মেডেল, প্রশংসাপত্র এবং অন্য সব সামরিক গৌরব লাভের নেশায়। স্পেনের সৈনাদল, কামানের গোলা বারুদ অথবা তোষামোদ সামরিক জীবনের কোন বিপদকেই তোয়াক্কা করে না সে। কেঁকড়া চুল ও নীল চোখ নিয়ে সে গিলে খেতে লাগল স্পেনীয় সৈন্যদের। যুদ্ধের কথা শুনে তার রক্ত গরম হয়ে ওঠে না। একমাত্র জ্যাক অব ডায়মণ্ডস এবং রাশিয়ার রাণী ক্যাথরিন ছাড়া কারও সঙ্গে তুলনা চলে না।

আমি অনেক বুঝিয়ে বললাম-এ পথ ছেড়ে ভবিষ্যৎ গোছাও। এমন বেপরোয়া যুদ্ধবাজ হলে মৃত্যু অনিবার্য। কেউ তোমার খোজ করবে না। আমি তো কিছুতেই বুঝতে পারিনা কেন তুমি এমন হয়ে উঠলে। তোমাব স্বভাব সম্পূর্ণ বদলে গেছে। কেমন করে এটা হল।

উইলি বলল—এসব তুমি বুঝবে না বেন! বলে অবজ্ঞার হাসি হাসল।

আমি বললাম–যেও না। আমার কথা শোন, আমার কাছ থেকে যতই দুরে থাকার চেষ্টা কর না কেন, তোমার হাবভাব আমাকে ভাবায়। কেন তুমি বীর সাজছ আমি জানি। হয় তোমার মাথা খারাপ, না হয় এই পথে চলে কোন মেয়েকে হাত করতে চাইছ। আর এটা যদি কোন মেয়ের ব্যাপার হয় তাহলে একটা জিনিস তোমায় দেখাতে পারি।

আমার পিছনের পকেট থেকে একটা সান অগাস্টিন নিউজপেপার টেনে এনে তাকে দেখালাম। কাগজের আধ কলম জুড়ে ছাপা হয়েছে মিরা এলিসন ও জো গ্রানবেরির (Joe Granberry) বিয়ের খবর।

উইলি হেসে উঠল। বুঝলাম এতেও তাকে কাবু করতে পারেনি। বলল এটা হবে সকলেই জানত। এক সপ্তাহ আগে খবরটা শুনেছি।

আমি–ঠিক আছে। তাহলে তুমি কেন এমন বেপরোয়া খ্যাতির রঙধনুর (rainbow of fame) পিছনে ছুটছ? তুমি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চাও না কি আত্মঘাতী দলের (suicide club) সদস্য?

এই সময় ক্যাপ্টেন ফ্লয়েড নাক গলিয়ে বললেন–এই বাজে বকবকানি থামিয়ে কোয়ার্টারে যাও। নাহলে রক্ষী দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেব। আপাতত তোমরা বস, আর তোমাদের কারো কাছে কিছু তামাক হবে?

আমি–আমরা চলে যাচ্ছি ক্যাপ্টেন। আমাদের স্নানের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলছিলাম সে সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? আচ্ছা এখানে উচ্চাকাঙক্ষা কিসের জন্য? দিনের পর দিন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে কিসের আশায়? শেষ পর্যন্ত সে কি কিছু পায়? আমি কিন্তু বাড়িতেই ফিরে যেতে চাই। কিউবা ডুবল কি ভাসল তাতে কিছু যায় আসে না। রাণী সোফিয়া ক্রিস্টিন না চালি কার্লবার্সন (Sophia Christina or Charlie Culberson) কে এই দ্বীপে রাজত্ব করবে তাতে আমার কি? জীবিতদের তালিকা ছাড়া অন্য কোন তালিকায় নাম তুলতে চাই না। আপনিও তো দেখছি ঐ তালিকার পিছনেই ছুটছেন। বলুন তো কিসের জন্য আপনি নিজে এমন করছেন?

দুই হাঁটুর মধ্যে থেকে নিজের তলোয়ার-টা তুলে ক্যাপ্টেন ফ্রয়েড বললেন, দেখ, বেন, তোমার এই ভীরুতা ও পলায়নী মনোভাবের (cowardice and desertion) জন্য উদ্ধতম অফিসার হিসাবে আমি তোমাকে কোট মার্শাল করতে পারি। কিন্তু তা করব না। বরং তোমাকে বলব কেন আমি পদোন্নতি এবং যুদ্ধ ও জয়লাভের প্রাপ্য সম্মান পাবার জন্য এত চেষ্টা করছি। একজন মেজর একজন ক্যাপ্টেনের থেকে অনেক বেশী মাইনে পায়, আর টাকাটা আমার বড় দরকার।

আমি-আপনি খাঁটি বলেছেন। এটা আমি বুঝতে পারি। কিন্তু আমি বুঝতে পারি না যে উইলি রবিন্সের বাড়ির লোকরা সকলে ধনী, যে স্বভাবতই ধীর, স্থির এবং উচ্চাকাঙক্ষাবর্জিত, সে কেন হঠাৎ দুর্ধর্ষ যোদ্ধা হয়ে উঠল। আমার মনে হয় এটা একটা সহজ উচ্চাকাঙক্ষার দৃষ্টান্ত। সে চায় ইতিহাসের পাতায় তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাক।

শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটল। ক্যাপ্টেন ফ্লয়েড মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হলেন, বা নাইট কমাণ্ডার হলেন। উইলি রবিন্স হল আমাদের কোম্পানির ক্যাপ্টেন।

হয়ত খ্যাতির জন্য এর বেশি সে আর যায় নি। আমি যতটুকু জানি সমাপ্তি সেই ঘটাল। নিজেই একটা খণ্ডযুদ্ধ সৃষ্টি করে আঠারটা ছেলেকে খুন করল। অথচ এটার কোন দরকারই ছিল না। একদিন রাত্রে আমাদের দশজনকে নিয়ে একশ নব্বই গজ চওড়া একটা ছোট খাড়ি পার হয়ে, পাহাড় ডিঙিয়ে, ঝোপঝাড়ের ভিতরে লুকিয়ে একটা ছোট গ্রামে পৌঁছে বেনি ভীডাস নামে এক স্পেনীয় সেনাপতিকে গ্রেপ্তার করল। আমার মনে হয়েছিল বেনির জন্য এত কষ্ট করার মানে হয় না, কেননা লোকটি কালো, পায়ের জুতো নেই, আর সবথেকে বড় কথা শত্রুপক্ষের কাছে আত্মসমর্পন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল।

সেই কাজটাই উইলিকে এনে দিল তার বাঞ্ছিত পদোন্নতি। স্যান অগাস্টিন সংবাদ এবং গালভেস্টন সেন্ট লুইস, নিউইয়র্ক ও কানসাস সিটির কাগজে তার ছবি ও দুঃসাহসিক অভিযানের খবর ছাপা হল অনেকটা জায়গা জুড়ে। স্যান অগাস্টিন তার সাহসী ছেলের জন্য হৈচৈ শুরু করে দিল।

পত্রিকাটি সরকারের কাছে প্রার্থনা জানাল সামরিক বাহিনী ও জাতীয় রক্ষীদলকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরিয়ে আনা হোক আর যুদ্ধ চালাবার ভার দেওয়া হোক উইলিকে।

যুদ্ধ শেষ হল। যদি শেষ না হত উইলি তাহলে আরও সোনার মেডেল ও প্রশংসা পেত। কর্ণেল নিযুক্ত হবার দিন তিনেক পর এবং ডাকযোগে আরও তিনটে সোনার মডেল তার হাতে আসার পর যুদ্ধ বিরতি ঘোষনা করা হল।

যুদ্ধ শেষ হলে কোম্পানি স্যান অগাস্টিন -এ ফিরে গেল। পুরনো শহরটা ছাপার আসরে, তারযোগে, বিশেষ লোক দিয়ে জানিয়ে দিল আমাদের সম্মানে বিরাট সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করা হবে।

আমি আমাদের বললেও, আসলে এ সবের লক্ষ্য ছিল প্রাক্তন সৈনিক বর্তমান ক্যাপ্টেন ও ভবিষ্যত কর্ণেল উইলি রবিন্স। তাকে নিয়ে শহরটা মাতাল হয়ে উঠল।

সকলেরই ইচ্ছা ছিল কর্ণেল উইলি একটি গাড়ীতে থাকবেন, আর বিশিষ্ট নাগরিকগণ ও অস্ত্রাগারের কিছু অল্ডারম্যান গড়িটা টানবেন। কিন্তু দেখা গেল নিজের কোম্পানির সঙ্গে থেকেই সকলের আগে আগে স্যান হাউস্টন এভেনিউ ধরে এগিয়ে চলল। রাস্তার দুই দিকের বাড়ীতে পতাকা ও মানুষে ছেয়ে গেল। তাদের মুখে এক ধ্বনি, রবিন্স। অথবা হেলো উইলি! আমার জীবনে উইলি অপেক্ষা এত খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ দেখিনি।

আমাদের জানান হল সাড়ে সাতটার সময় আদালত ভবনে আলোকসজ্জা হবে এবং প্যালেস হোটেলে হবে বক্তৃতা ও ভোজন।।

অস্ত্রাগারে পৌঁছে শোভাযাত্রা শেষ হবার পর উইলি আমায় বলল, আমার সঙ্গে হেঁটে যাবে?

আমি নিশ্চয়ই যাব, খুব খিদে পেয়েছে। বাড়িতে ফিরে কিছু খেতে হবে। তা হোক, তোমার সঙ্গে আমি যাব।

একটা গলি ধরে উইলি আমায় নিয়ে গেল, পৌছালাম ছোট সাদা রঙের বাড়িতে। ২০X৩০ ফুট মাপের ছোট লনটা ইট ও পুরানো পিপেতে ঠাসা।

আমি বললাম- আরে থাম আগে সংকেতটা জানাও। এই গোপন আস্তানাটা কি তুমি চেন না? এই পাখির বাসাটা জো প্রামবেরিই তৈরি করেছিল। মিরা এলিসনকে বিবাহ করার আগে। তুমি ওখানে যাচ্ছ কেন?

উইলি এতক্ষণে গেট খুলে ফেলেছে। ইটের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে সে সিঁড়ির কাছে গেল। বারান্দায় একটা দোলনা চেয়ারে বসে মিরা সেলাই করছিল। মাথায় চুড়ো করে চুল বাঁধা ছিল। মুখে দাগ। এরকম আগে দেখিনি। বারন্দায় এক কোনে কলার বিহীন সার্ট পরে মুখময় দাড়ি নিয়ে জো মাটি খুঁড়ছে, গাছ লাগবে বলে। মুখ তুলে তাকিয়ে দেখল কিন্তু একটা কথাও বলল না। মিরাও কিছু বলল না।

ইউনিফর্ম পরে, মেডেল ঝুলিয়ে সোনালি হাতলের নতুন তলোয়ার নিয়ে উইলিকে ফুলবাবুর মত দেখচ্ছিল। মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে মিরার দিকে তাকিয়ে দাঁত চেপে বলে উঠল—ওঃ আমি জানি না। চেষ্টা করলে হয়তো আমিও পারতাম।

এই কথাগুলো বলেই উইলি টুপি পরে বেরিয়ে এল।

উইলির কথাগুলি শুনে আমার কেন যেন সেই দিনকার নাচের রাতের কথা মনে পড়ে গেল, যেদিন উইলিকে দেখে ঠাট্টা করেছিল মিরা।

আমরা স্যান হাউস্টন এভেনিউতে ফিরে এলাম।

উইলি বললঃ আচ্ছা এবার চলি বেন, বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নেব।

আমি— তুমি? তোমার কি হয়েছে বল তো? তোমাকে সম্মান জানানোর জন্য সবাই যে অপেক্ষা করছে? সমস্ত রকম অনুষ্ঠান তোমার জন্য আটকে আছে।

উইলি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল।

বলল—ঠিক আছে বেন। এখনও যদি সব কিছু ভুলে না যাই তো আমাকে ধিক।

আর তখনই গ্রাঞ্জার শেষ কথাটি উচ্চারণ করল—সেই জন্য আমি বলি উচ্চাকাঙক্ষার শুরু যে কোথায়, আর শেষই বা কোথায় তা তুমি বলতে পার?

No comments