মহাকবি শেখ সাদীর ৩০টি উক্তি ও উপদেশ বাণী

মহাকবি শেখ সাদীর ৩০টি উক্তি ও উপদেশ বাণী

পারস্যের মহাকবি শেখ সাদী (রহ.) তার পুরো নাম আবু মুহাম্মদ মোশাররফ উদ্দিন বিন মোসলেহ উদ্দিন আবদুল্লাহ সাদি সিরাজি। তিনি ইরানের সুপ্রসিদ্ধ ‘সিরাজ’ নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। সে দেশের রাজদরবারে সাদির বাবা চাকরি করতেন। সাদির বাবার নাম সৈয়দ আবদুল্লাহ।

মায়ের নাম মাইমুরা খাতুন। কৈশরের আগেই কবির বাবা মারা যান। এ কারণে কবির ছেলেবেলা কেটেছিল অনেক কষ্টে। তার মা তাকে নিয়ে বড় কঠিন বিপদে পড়ে যান।

শেষমেশ রক্ষণাবেক্ষণের ভার অর্পিত হয় তার নানার ওপর। কিন্তু নানার অবস্থাও সচ্ছল ছিল না। এদিকে স্বভাবকবি বলেই সাদির জ্ঞান, তৃষ্ণাও ছিল প্রবল। মা ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন ছেলেকে কীভাবে মানুষ করবেন। এতিম সাদিকে নিয়ে তার মা কতটা কষ্টে দিনাতিপাত করেছেন তা কবি নিজেই বর্ণনা করেছেন।

শেখ সাদী (রহ.) কল্যাণমূলক ও শিক্ষনীয় অসংখ্য উক্তি ও উপদেশ বাণী লিখে গেছেন। তার সেসব উপদেশমালা আজো সবার কাছে সমান গুরুত্ব বহন করে। এর মধ্য থেকে এখানে এমন ৩০টি শেখ সাদীর উক্তি ও উপদেশ বানী তুলে ধরা হল, যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে।

১. অজ্ঞের পক্ষে নীরবতাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। এটা সবাই জানলে কেউ অজ্ঞ হতো না।

২. অকৃতজ্ঞ মানুষের চেয়ে কৃতজ্ঞ কুকুর শ্রেয়।

৩. আমি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই। তার পরেই ভয় পাই যে আল্লাহকে মোটেই ভয় পায় না।

৪. মানুষ এমনভাবে জীবনযাপন করে যেন কখনো মরতে হবে না, আবার এমনভাবে মরে যায় যেন কখনো বেঁচেই ছিল না।

৫. হিংস্র বাঘের ওপর দয়া করা নিরীহ হরিণের ওপর জুলুম করার নামান্তর।

৬. যে সৎ, নিন্দা তার কোনো অনিষ্ট করতে পারে না।

৭. প্রতাপশালী লোককে সবাই ভয় পায় কিন্তু শ্রদ্ধা করে না।

৮. দেয়ালের সম্মুখে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় সতর্ক হয়ে কথা বল, কারণ তুমি জান না দেয়ালের পেছনে কে কান পেতে দাঁড়িয়ে আছে।

৯. মুখের কথা হচ্ছে থুথুর মতো, যা একবার মুখ থেকে ফেলে দিলে আর ভিতরে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কথা বলার সময় খুব চিন্তা করে বলা উচিত।

১০. মন্দ লোকের সঙ্গে যার ওঠাবসা, সে কখনো কল্যাণের মুখ দেখবে না।

১১. দুই শত্রুর মধ্যে এমনভাবে কথাবার্তা বল, যেন তারা মিলে গেলেও তোমাকে লজ্জিত হতে না হয়।

১২. পরকালে যাহা আবশ্যক তাহা যৌবনে সংগ্রহ করিও।

১৩. অযোগ্য লোককে দায়িত্ব দেওয়া চরম দায়িত্ব হীনতা।

১৪. মিথ্যাবাদীর স্বরণশক্তি অধিক।

১৫. ভদ্র লোক সেই, যে সত্যের উপাসক।

১৬. বল অপেক্ষা কৌশল শ্রেষ্ঠ ও কার্যকারী।

১৭. প্রতিশ্রুতি খুব কম দিও । দয়া করবার আগে ন্যায়বান হও অজ্ঞের পক্ষে নীরবতাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। এটা যদি সবাই জানত তাহলে কেউ অজ্ঞ হত না।

১৮. বাঘ না খেয়ে মরলেও কুকুরের উচ্ছিষ্ট মুখে তুলে না। বিদ্যা এমন সম্পদ যা বিতরনে বাড়ে ।

১৯. ইহ- পরকালে যাহা আবশ্যক তাহা যৌবনে সংগ্রহ করিও।

২০. না শিখিয়া ওস্তাদি করিও না।

২১. কোন কাজেই প্রমাণ ছাড়া বিশ্বাস করিও না।

২২. তিন জনের নিকট কখনো গোপন কথা বলিও না- (ক) স্ত্রী লোক. (খ) জ্ঞানহীন মূর্খ. (গ) শত্রু।

২৩. পথের সম্বল অন্যের হাতে রাখিও না।

২৪. পরিক্ষা ভিন্ন কিছু বিশ্বাস করিও না।

২৫. বানরকে স্নেহ করিলে মাথায় উঠে।

২৬. বিড়ালকে স্নেহ করিলে কোলে উঠে।

২৭. সকল কাজেই মধ্যপন্থা অবলম্বন করিও।

২৮. যে মিথ্যায় মঙ্গল নিহিত তাহা অসৎ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত সত্য অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর।

২৯. এক জনের জুতো নেই। এই নিয়ে তার আক্ষেপ। তার আক্ষেপ ঘুচল। কেননা সে দেখল এক জনের পা-ই নেই।

৩০. একজন ঘুমন্ত ব্যক্তি আর একজন ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগ্রত করতে পারে না ।

No comments