নীতি গল্প: দুটি বাচ্চা ছেলে ও শিক্ষকের উপদেশ

নীতি গল্প: দুটি বাচ্চা ছেলে ও শিক্ষকের উপদেশ

কোন একদিন এক শিক্ষক পথের ধারের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। অদুরে ৯/১০ বছরের দুটি বাচ্চা ছেলে পরস্পরের সাথে ঝগড়া করছিল। প্রথমে সামান্য কিছু কথা কাটাকাটির পর্যায়ে থাকলেও তাদের ঝগড়া এক সময় মারাত্মক রুপ লাভ করে। দুজন দুজনকে নানা অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে।

এক সময় তারা একে অপরের পরিবার, বাবা মা এর সম্পর্কে সত্য মিথ্যা মিশিয়ে অরুচিকর কথা বলতে থাকে।

প্রথম থেকেই শিক্ষক সব খেয়াল করছিলেন। তিনি আর বসে থাকতে পারেন না। উঠে গিয়ে ছেলে দুটিকে আদর করে বুঝিয়ে তাদের ঝগড়া থামান। বাচ্চা দুটির হাত ধরে তাদেরকে তার সাথে যেতে বলেন। ছেলে দুটি প্রথমে ভয় পেলেও শিক্ষকের সুন্দর কথাতে তার সাথে যেতে রাজি হয়। তিনি ছেলে দুটিকে একটি পুকুরের ধারে নিয়ে যান।

পুকুরটি তখন একদম শান্ত অবস্থায় ছিল আর পানি ছিল একদম স্বচ্ছ। তিনি পুকুরটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেন এখানে কি দেখতে পাচ্ছ। ছেলে দুটি বলে পানি। আর কি দেখছ জানতে চাইলে বলে পানি খুব পরিস্কার, কিন্ত নিচে ময়লা জমে আছে সেটা দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক জানতে চান উপরের পরিস্কার পানি দিয়ে কী মুখ ধোয়া যাবে? উত্তরে ছেলে দুটি বলে হ্যা।

তিনি খুব সাবধানে পুকুরের পানি হাতে নিয়ে ছেলে দুটিকে দেখান, সেখানে কোন ময়লা ছিল না।এবার শিক্ষক একটি লাঠি নিয়ে একজনেন হাতে দেন, আর পুকুরের পানিতে ঘাটতে বলেন। এবার তিনি জানতে চান কি দেখছ। ছেলে দুটি বলে পানি নোংরা হয়ে গেছে।তিনি আর জোরে পুকুরের মাটিতে ঘাটতে বলেন, এবার কী দেখছ? তারা বলে পানি আর নোংরা হয়ে গেছে। শিক্ষক জানতে চান এ পানি দিয়ে কী মুখ ধোয়া যাবে, তারা বলে না, তাহলে মুখ নোংরা হয়ে যাবে।

এবার শিক্ষক বাচ্চা দুটিকে বলেন, পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষের কিছু দোষ আর গুন থাকে। আমরা যদি দোষ না দেখে গুন গুলোকে দেখি তাহলে তা পানির প্রথম অবস্থার মতই স্বচ্ছ থাকবে।পরস্পরের প্রতি ভালবাসা জন্মাবে।বাচ্চা দুটি তাদের ভুল বুঝতে পারে।

শিক্ষা: অপরের নোংরা ঘাটতে গেলে তা নিজের গায়েই লাগে।

No comments