তালগাছের দাঁতন – হাসির গল্প

তালগাছের দাঁতন – হাসির গল্প

এক গ্রামে দুই টাপলার (সত্যমিথ্যা ও বানোয়াট কথার ওস্তাদ) বাস। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বও খুব। একজন অন্যজনকে নানা গাঁজাখুরি ও অদ্ভুত গালগল্প করে নাকাল করার চেষ্টায়ও থাকতো সব সময়। একদিন দুই টাপলা নিজ নিজ মামার বাড়ির গল্প করছে। সে এমন গল্প যে শুনলে ভিরমি খাওয়ার অবস্থা হয়।

দুই টাপলার একজনের নাম ছিল রাঙা আর একজনের নাম বেঙ্গা। তাদের এক দোস্ত ছিলো। তার নাম এঙ্গা। তাদের গলায় গলায় ভাব। সব সময় এক সঙ্গে থাকে। গুলপট্টি মারে মানুষ তা শুনে অবাক হয়। আবার মজাও পায়। তাদের এই গল্পবাজ ভূমিকার জন্য লোককে আকর্ষণ করার ক্ষমতাও তাদের ছিলো প্রবল।

ষাট-সত্তর বছর আগের কৃষি প্রধান কর্ম ও ব্যস্ততাহীন গ্রাম বাংলায় তাদের এক ধরনের প্রভাবও ছিল। তাদের উদ্ভট, অদ্ভুত গল্পগাছা শুনে লোকে মজাও পেত এবং অলস অবসর মুহূর্তে সে গল্প উপভোগও করত। ত্যাঁদড় ছেলেপেলেরা তাদের নিয়ে একটা ছড়া কাটত। ছড়াটি ছিল এ রকমঃ
রাঙা বড় কটকইটা
বেঙ্গা মারে টান
মিছাকথা শুনবার চাইলে
এঙ্গারে ডাক দিয়া আন।

তো, একদিন রাঙা চুটিয়ে গল্প করতে যেয়ে নানা আজগুবি গল্পের পর বলেঃ আমার মামুগো বাড়িতে একটা টিনের ঘর আছে, সেটা একশ পঁচিশ হাত লম্বা।
এর উত্তরে বেঙ্গা বলেঃ আমার নানা যে তালগাছটা দিয়া দাঁত মাজে তা এক শ’হাত লম্বা।

এটা শুনে রাঙা বলেঃ গল্প মারার আর জায়গা পাস না! এত বড়ো দাঁতন তর নানায় রাখত কোথায়?

বেঙ্গাঃ আরে আহাম্মক, তুই কি আন্দা আইয়া গেসছ। রাখবো তেমুন বড়সড় ঘরতো আমার নানার আছিল না। তাই তালগাছের দাঁতনটা তর মামুগো সোয়াশ (১২৫ হাত) হাত ঘরেই রাখত। আন্দা ব্যাক্কল তুই দেহস নাই?

No comments