শিক্ষামূলক গল্প: নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নিন

শিক্ষামূলক গল্প: নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নিন

মাথার উপড়ে গনগনে রোদ, গ্রীষ্মকাল বলে কথা। চারিদিক ধু ধু ফাঁকা মাঠ, একটা পিঁপড়ের দেখা পর্যন্ত নেই। গরমের দিন গরম হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু সূর্যটা আজ বুঝি তার বউয়ের সাথে ঝগড়া করেছে, তাই হয়ত বেজায় ক্ষেপে গেছে, আর তার রাগ প্রকাশ করছে মর্ত বাসির উপর। এদিকে এক সিংহ জলের সন্ধানে হন্নে হয়ে ঘুরছে। এত বড় জঙ্গল অথচ কোথাও জল নেই, সব পুষ্করিণী শুঁকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।

শেষে তার মনে হল বনের মধ্যভাগে একটি বিশাল পুকুর আছে, এই গরমে সেই পুকুরে গেলে হয়ত জল পাওয়া যেতে পাড়ে। সে পুকুরের কাছে গিয়েই দেখে, একটু বিশাল দাঁতওয়ালা বুনো শুকর জলের জন্য পুকুরে নামছে। সিংহ পুকুরের দিকে তাকিয়ে দেখে, পুকুরে অনেকটাই জল আছে। সিংহ গর্জন করে উঠল। সিংহের গর্জন শুনে বুনো শুঁয়োর থেমে গেল ঠিকই কিন্তু ভয় পেল না। সিংহ দৌড়ে সেখানে গিয়ে বলল-

“আমি এই বনের রাজা, তাই এই পুকুরের জল আমার প্রাপ্য।“

বুনো শুঁয়োর বলল- “কিন্তু পুকুরে আমি আগে নেমেছি।“

এরপর দুইজনের মধ্যে শুরু হয়ে গেল কথা কাটাকাটি। এরপর বেঁধে গেল তুমুল ঝগড়া। কয়েক মিনিটেই তাদের ঝগড়া মারামারির রূপ নিয়ে নিল। বুনো শুঁয়োর আর সিংহের সাথে পেড়ে উঠবে কিভাবে? সিংহ আর শুয়োরের ধ্বস্তাধ্বস্তিতে বুনো শুয়োরের বিশাল দাঁত সিংহের শরীর ভেদ করে অপর পাশে চলে আসে। আর সিংহের মুখের দাঁতের কামড়ে শুয়োরের শ্বাসনালী বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, কিছুক্ষণ পড় দুইজনই রক্তাক্ত অবস্থায় কাতারাতে কাতরাতে মারা যায়।

এই ঘটনা ঘটে যাওয়ার কিছু সময় পড়, জলের সন্ধানে এক শেয়াল সেই পুকুরে আসে, সে এসেই দেখে সিংহ আর বুনো শুঁয়োর মরে পড়ে আছে। এই দৃশ্য দেখে সে বেজায় খুশি হয়, কারণ সে জীবনে এরকম দুটি বড় পশুর মাংসের স্বাদ গ্রহণ করেনি। এরপর সে পরম আনন্দে কড়মড় করে চিবিয়ে মাংস খেয়ে পুকুরের জল খেয়ে লেজ দুলাতে দুলাতে বনের ভেতর চলে গেল।

নীতিকথাঃ- দ্বন্দ্ব না করে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নেওয়া ভালো। যদি সিংহ আর বুনো শুঁয়োর দুইজনই একসাথে জল পান করে নিত, তাহলে তারা মারা যেত না, আর শেয়ালও তাদের মাংসের স্বাদ নিতে পাড়ত না। নিজেদের দুর্বলতা যেন অন্যের কাছে সুবিধার কারণ না হয়ে দ্বারায় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

No comments