ভাবনা – রথীন ঘোষ

ভাবনা – রথীন ঘোষ

এক সন্ন্যাসী ও তার এক শিষ্য একদিন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। তারা হঠাৎ দেখতে পেল, জনমানবহীন নদীর ঘাট সেখানে একটি যুবতী নারী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে, তার সঙ্গে কিছু কাঠ। সন্ন্যাসী দাঁড়ালেন, বললেন মা কাঁদছো কেন।

যুবতী বলল আমি জঙ্গলে কাঠ কুড়াতে গিয়েছিলাম, কিন্তু কখন সময় চলে যায়, আমি বুঝতে পারিনি, এর মধ্যে এসে দেখি সব লোক চলে গেছে নৌকাও নেই। নৌকা আর এর মধ্যে আসবেনা। এখানে একা থাকতে ভয় লাগছে। যে কোন সময় বাঘ ভাল্লুক আসতে পারে যদি বেচেও যাই তো সকালে কাউকে মুখ দেখাতে পারবনা, সকলে বলবে, কোথায় রাত কাটালাম কে জানে। এতবড় নদী সাঁতার ও কাটতে পারব না।

সন্ন্যাসীর মনে দয়া এলো, তিনি মেয়েটাকে নিজের ঘাড়ে নিয়ে সাঁতরে পার করে দিলেন। শিষ্যকে নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলেন। শিষ্য এদিকে ভাবছে, আমাকে বলে ব্রম্মচর্যের আটটি নিয়ম। স্ত্রী স্পর্শ, চিন্তন,মনন ইত্যাদি নারী নরকের দ্বার। কিন্তু মুখে কিছু বলছে না, মুখ ভার করে আছে। রাতে তারা খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার সময় সন্ন্যাসী জিজ্ঞেস করলেন, কি বৎস তোমার কি হয়েছে, শিষ্য বলল না কিছুনা।

মহন্ত বললেন, না কিছু তো হয়েছে তখন থেকে তোমার মন খারাপ দেখছি। তখন শিষ্য বলল যে আমাকে ব্রম্মচর্যের নিয়ম মানতে বলেন, আর আপনি কি করলেন, সুযোগ পেয়েই শুধু কথা বললেন না, ছুলেন আবার ঘাড়ে তুল্লেন।

সন্ন্যাসী বললেন আমি ঘাড়ে তুল্লাম আবার নামিয়ে দিলাম কিন্তু তুই তো এখন ও মাথায় নিয়ে আছিস।

No comments