‘আমি সরকারী লোক’ মজার গল্প
এক গ্রামের এক লোক একদিন খরস্রোতা নদীতে পড়ে যায়। সে সাঁতার জানতো। তবে নদীর তীব্র স্রোতের সঙ্গে লড়াই করেও কোনক্রমেই তীরের দিকে আসতে পারছিল না। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চেষ্টা করে তীরের দিকে একহাত এগোয় তো স্রোতের তোড়ে তিন হাত পিছিয়ে যায়। এই বিপদের মধ্যে জলের ঘূর্ণাবর্তে পড়ে। নাকানি-চুবানির একশেষ হচ্ছিল। শেষে নদীর দৃশ্যমান প্রবল স্রোত, তলদেশের কুটিল ঘূর্ণাবর্ত এবং মেঘলা দিনের তীব্র বায়ুপ্রবাহজাত জলের উচ্ছ্বাসময় ঢেউয়ে খাবি খেতে খেতে সে যখন আর পারছিল না তখন বাচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। কেউ তাতে সাড়া দেয়নি।
তাই দ্বিতীয়বার সে ‘আমি সরকারি লোক নদীতে ডুবে মরলাম, তোমরা আমারে বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকে। এতে কাজ হয়। নদীতে পানি নিতে এসেছিল এক কুলবধূ। সে লোকটির অবস্থা দেখে দ্রুত ছুটে গিয়ে, কাছেই ছিল থানা, সেখানে বলে, আপনেদের এক সরকারি মানুষ গাঙ্গের কাটালে পইড়া ডুইবা মরতাছে। আর, সরকারি লোক ডুইবা গেল বইলা চিল্লাইতাছে—আপনেরা জলদি যান। হেরে বাঁচান।
’থানা সচকিত হয়। দুই সিপাই আর বোট নৌকার মাঝি থানার পেছনের খাড়িতে বাঁধা বোট নিয়ে নদীতে ছোটে। সাধারণ মানুষ মরলে থানার কিছু হবে না। কিন্তু সরকারি লোক থানার হামছায়ায় (কাছে পিঠে) বেঘোরে মারা পড়লে খবর আছে। তাই দ্রুত বোট ছোটে সরু খাড়ি ধরে নদীর দিকে এবং পানি খেয়ে ঢোল হয়ে যাওয়া মানুষটিকে উদ্ধার করে আনে।
তাকে থানায় সেবযত্ন ও গরম দুধ খাইয়ে সুস্থ করে তোলা হয়।
থানাদার তাকে জিজ্ঞেস করে : তুমি বলেছ, তুমি সরকারি লোক। তা, কোন্ অফিসে কি কাজ কর?
লোকটি বলে :
“সাহেবের যে নৌকার মাঝি,
তার যে পাকায় কাছি,
তার যে দেয় গুছি
আমার বাড়ি তার কাছাকাছি।”
থানাদার লোকটির পাছায় বুট দিয়ে লাথি মেরে বলে : শালা! ভাগ জলদি। বদমায়েশীর আর জায়গা পাও না!
Post a Comment