ভাইরাস - হুমায়ূন আহমেদ


নুরুজ্জামান সাহেব বর্তমানে একজন সুখী মানুষ।

বীমা কোম্পানীতে ভাল চাকরি করতেন। সাত বছর হল রিটায়ার করেছেন। রিটায়ারের সময় গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড সব মিলিয়ে হাতে একসঙ্গে বেশ কিছু টাকা পেয়েছিলেন। সেই টাকা ব্যাংকে জমা আছে। ইন্টারেস্ট যা পান তাতেই তার মোটামুটি চলে যায়। স্বাস্থ্য ভাল, রোগ-ব্যাধি নেই। ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, হার্টের সমস্যা এই জাতীয় বৃদ্ধ বয়সের রোগের কোন কিছুই তাকে এখনো ধরেনি। দুটি মেয়েই ভাল বিয়ে দিয়েছেন। একজন বরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে, অন্যজন সিঙ্গাপুরে। স্ত্রী গত হয়েছেন। নুরুজ্জামান সাহেব একা থাকেন। এই একটাই যা। সমস্যা। তবে অনেকদিন থেকেই একা আছেন বলে খানিকটা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তার খারাপ লাগে না, বরং ভালই লাগে। দিনের বেলাটা তিনি ঘুরে ঘুরেই কাটান। দুপুরে নিরিবিলি দেখে কোন একটা হোটেলে খেয়ে নেন। ভিড়ভাট্টা তার একেবারেই সহ্য হয় না। রাতে কিছু খান না। কোনদিন একটা কলা, কোনদিন একটা আপেল খেয়ে শুয়ে পড়েন। এক ঘুমে রাত কাবার করে দেন।

আশ্বিন মাসের এক দুপর। বেলা প্রায় দুটা। নুরুজ্জামান সাহেব লালবাগের কেল্লা দেখে একটা হোটেলে ভাত খেতে ঢুকেছেন। হোটেলের নাম দিল্লী রেস্টুরেন্ট। দিল্লী রেস্টুরেন্টের পাশেই আরেকটা হোটেল–হোটেল আমানিয়া। সেখানে রমরমা ভিড়। দিল্লী রেস্টুরেন্ট একেবারেই ফাঁকা। মনে হয় এই হোটেলের খাবার–দাবার সুবিধার না। নুরুজ্জামান সাহেবের কাছে খাবারটা প্রধান না, নিরিবিলিটা প্রধান। কাজেই তিনি ঢুকেছেন দিল্লী রেস্টুরেন্টে। কোণার দিকের অন্ধকারের একটা টেবিলে বসেছেন। ইলিশ মাছ, সবজি এবং ডালের অর্ডার দিয়ে চুপচাপ বসে আছেন। সাধারণত তিনি মাছ খান না। আজ কেন জানি মাছ খেতে ইচ্ছা করল। তখন হোটেলে আরেকজন কাস্টমার ঢুকল। এত ফাঁকা জায়গা থাকতে নুরুজ্জামান সাহেবের কাছে এসে বলল, আপনার টেবিলে বসতে পারি?

নুরুজ্জামান সাহেব না বলতে গিয়েও বললেন না। হোটেলটা তার না। কাস্টমার এসেছে, পয়সা দিয়ে খাবে। তার যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসবে। নুরুজ্জামান সাহেবের মনটা খারাপ হয়ে গেল। কারো সামনে খাওয়া-দাওয়া করতে তার ভাল লাগে না।

আশা করি আপনার বিরক্তি উৎপাদন করছি না।

জি না?

একটা দেয়াশলাই দিতে পারেন?

নুরুজ্জামান সাহেব দেয়াশলাই বের করে বাড়িয়ে দিলেন। তার মন আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে–বোঝাই যাচ্ছে এই লোক প্রচুর কথা বলবে। বক বক করে। মাথা ধরিয়ে দেবে। এখনো সময় আছে, তিনি ইচ্ছে করলে অন্য টেবিলে চলে যেতে। পারেন। কাজটা অভদ্রতা হয়।

আশা করি সিগারেটের ধোয়ায় আপনার অসুবিধা হচ্ছে না।

না, হচ্ছে না।

আন্তরিক ধন্যবাদ।

লোকটার অন্য কোন মতলব নেই তো? ধান্ধাবাজ না তো? বাংলাদেশে ধান্ধাবাজ লোকের কোন অভাব নেই। কয়েকদিন আগেই এরকম একজন ধান্ধাবাজের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ইস্ত্রী করা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে রীতিমত ভদ্রলোক। চোখে সোনালী রিমলেস চশমা। মুখ ভর্তি হাসি। নুরুজ্জামান সাহেব একটা হোটেলে খেতে বসেছেন, লোকটা তার সামনে বসে অত্যন্ত বিনীতভাবে বলল, স্যার, কিছু মনে করবেন না। গুলিস্তানের মোড়ে আমার মানিব্যাগটা চুরি হয়েছে। খিদেয় মরে যাচ্ছি। চারটি ভাত খাওয়ান।

এরকম সম্প্রান্ত চেহারার একজন মানুষের মুখের উপর না করা মুশকিল। লোকটা ভাত খেল। ভাত খাওয়ার পর দৈ, মিষ্টি খেল। সবশেষে মিষ্টি পান এবং একটা বেনসন সিগারেট।

নুরুজ্জামান সাহেবকে কিছু বলতে হচ্ছে না, সে নিজেই হাসিমুখে অর্ডার দিচ্ছে। কোন দ্বিধা নেই, সংকোচ নেই। কি সুন্দর করে বলছে–

স্যার, আপনার অনুমতি নিয়ে একটা সিগারেট দিতে বলি। এমন চমৎকার লাঞ্চের পর সিগারেট না খেলে লাঞ্চটার অপমান করা হয়–এই বেয়ারা, একটা বেনসন নিয়ে এসো। দেখে শুনে আনবে, ড্যাম্প যেন না হয়। ড্যাম্প হলে থাবড়া খাবি।

এই লোকও সে রকম কেউ না তো? নুরুজ্জামান আড় চোখে তাকালেন। সে রকমই তো মনে হচ্ছে। অন্ধকার কোণায় এসে বসেছে, চোখে সানগ্লাস। চোখ থেকে সানগ্লাস খোলেনি। একবার রিডার্স ডাইজেস্টে পড়েছিলেন–যারা সহজে সানগ্লাস খুলতে চায় না তাদের ভেতর সমস্যা থাকে। লোকটা পোশাকে-আশাকে ভাল। খয়েরি রঙের হাফ হাওয়াই শার্ট। শাদা প্যান্ট। শাদা প্যান্টের সঙ্গে মিলিয়ে ধবধবে। শাদা চামড়ার জুতা। বিদেশী জুতা নিশ্চয়ই। সিগারেট যে খাচ্ছে দামী সিগারেটই খাচ্ছে। সুন্দর গন্ধ আসছে। সস্তা সিগারেটের দম আটকানো গন্ধ না। সিগারেট বের করেছে সিগারেট-কেস থেকে। আজকাল অবশ্যি কেউ সিগারেট কেস ব্যবহার করে না। লোকটা সিগারেট-কেস নুরুজ্জামান সাহেবের দিকে বাড়িয়ে দিল। নিচু গলায় বলল, আপনি কি সিগারেট খাবেন?

নুরুজ্জামান বিরক্ত মুখে বললেন, জ্বি না, আমি ভাত খাব। ভাতের অর্ডার দিয়েছি।

ভাত চলে এসেছে। সুন্দর সরু চালের ভাত। হোটেলে খাবার একটাই সুবিধা। হোটেলে তরকারি যেমনই রাধুক, ভাত ভাল রাধে। বাড়ির ভাত কখনো এ রকম হয় না, কোন কোন দিন চাল-চাল থাকে, কখনো নরম কাদার মত। এই জন্যেই তিনি বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে দিয়েছেন।

স্যার, আপনি কি আমার উপস্থিতিতে বিরক্ত বোধ করছেন?

নুরুজ্জামান হ্যাঁ-না কিছুই বললেন না। সবজি দিয়ে ভাত মাখতে লাগলেন। সবজির চেহারা দেখতে ভাল। খেতে কেমন কে জানে!

লালবাগের কেল্লা কেমন দখলেন স্যার?

নুরুজ্জামান চমকে উঠলেন, ঐ লোকটি লালবাগ কেল্লা থেকেই পেছনে। লেগেছে? নাশের কথা! মতলবটা কি?

আপনি যখন কেল্লা দেখছিলেন আমিও দেখছিলাম। আমি অবশ্যি এর আগেও অসংখ্যবার দেখেছি। বাংলাদেশে দেখার কিছু নেই। একই জিনিশ বারবার দেখতে হয়। লালবাগের কেল্লা আপনি কি এই প্রথম দেখলেন?

জি।

পুরানো আমলের জিনিশ দেখতে যদি আপনার ভাল লাগে তাহলে সম্রাট শাহজাহানের আমলের একটা গেট আছে, দেখে আসতে পারেন। ইউনিভার্সিটি এলাকায় যাবেন, টিএসসি এবং বাংলা একাডেমীর সামনে দিয়ে যে বড় রাস্তাটা গেছে নজরুল সরণী, ঐ রাস্তার মাথায় গেটের অংশবিশেষ আছে। জায়গাটা চিনেছেন? চার নেতার কবরের পাশে।

নুরুজ্জামান হ্যাঁ না কিছুই বললেন না। মাথা নিচু করে খেয়ে যাচ্ছেন। এরা রান্না ভাল করে। সজিটা ভাল বেঁধেছে। তারপরেও কাস্টমার কেন পাচ্ছে না? একদিন হেটেল আমানিয়াতে খেয়ে দেখতে হবে। কে জানে হয়ত ওদের রান্না। আরো ভাল।

প্রায় তিনশ বছরের পুরানো একটা গীর্জা আছে–আর্মেনিয়ান গীর্জা।

গীর্জা ফির্জা আমি দেখিনা।

স্যার, মনে হচ্ছে আমার প্রতিটি কথায় বিরক্ত হচ্ছেন। আমার পরিচয় পেলে অবশ্যি আর বিরক্ত হবেন না। আমি একজন ভ্যাম্পায়ার।

খাওয়া বন্ধ রেখে নুরুজ্জামান মুখ তুলে বিস্মিত হয়ে বললেন, আপনি কি?

ভ্যাম্পায়ার? ভ্যাম্পায়ার চিনেন না? ঐ যে কাউন্ট ড্রাকুলা। ট্রানসেলভেনিয়ার বিখ্যাত কাউন্টের গল্প পড়েননি?

নুরুজ্জামান আবার খেতে শুরু করলেন, এবং মনে মনে বললেন, ব্যাটা বদমাস! ভ্যাম্পায়ার সেজেছে!

আপনার মুখের ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। না পারারই কথা। ভ্যাম্পায়ার কি সেই সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই। গল্পের বই, সিনেমা থেকে আহরিত জ্ঞানের সবই ভুল।

তাই বুঝি?

জি তাই! লোকজ বিশ্বাস হচ্ছে ভ্যাম্পায়ার রাতে মানুষের রক্ত খেয়ে বেড়াবে, দিনে কফিনের ভেতর শুয়ে থাকবে। কারণ রোদ গায়ে লাগা মানে তাদের মৃত্যু। আমাকে দেখুন দিনে ঘুরে বেড়াচ্ছি।

তাই তো দেখছি।

শুধু চোখগুলি প্রটেক্ট করতে হয়। চোখে রোদ লাগানো যায় না।

এই জন্যই সানগ্লাস?

ঠিক ধরেছেন।

মানুষের রক্ত আপনি কখন খান? দিনে না রতে? মানুষের রক্ত খান তো?

জি খাই। বাধ্য হয়ে খেতে হয়। ভ্যম্পায়ারদের জন্যে কিছু এসেনসিয়াল ভিটামিন মানুষের রক্ত ছাড়া পাওয়া যায় না।

ও আচ্ছা।

স্যার, আপনি কি ভয় পাচ্ছেন?

না। আপনি আমার ঘাড়ে দাত বসিয়ে রক্ত খেয়ে ফেলবেন এটা বিশ্বাস হচ্ছে।

সেভাবে রক্ত খাই না। ব্লাড ব্যাংক থেকে কিনে নিয়ে আসি। একটা প্যাকেটে এক সপ্তাহ দু সপ্তাহ চলে যায়। ব্লাড ব্যাংকগুলি থাকায় সুবিধা হয়েছে। পছন্দসই রক্ত কিনতে পারছি। সব রকম রক্ত সবার স্যুট করে না। আমায় পছন্দের রক্ত হল। বি নিগেটিভ।

শুনে ভাল লাগল।

আপনার রক্তের গ্রুপ কি স্যার?

জানি না রক্তের গ্রুপ কি। পরীক্ষা করাইনি।

পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভাল। শহরে মানুষ যে হারে বাড়ছে–অ্যাকসিডেন্ট তো হামেশাই হচ্ছে। যে দিকে তাকাই শুধু মানুষ। মানুষের বৃদ্ধির হার খুবই আশংকাজনক।

ভ্যাম্পায়ারের সংখ্যা বাড়ছে না?

মানুষের তুলনায় কম। আগে আমরা মানুষের ঘাড়ে কামড় দিয়ে রক্ত খেতাম। তখন ভ্যাম্পায়ার বেশি ছিল। এখন ব্লাডব্যাংক থেকে আমরা রক্ত খাচ্ছি। কাজেই ভ্যাম্পায়ারের সংখ্যা বাড়ছে না। ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিচ্ছি।

কিছু মনে করবেন না। আমি ব্যাপারটা বোঝার কোন আগ্রহ বোধ করছি না।

শোনার পর আগ্রহবোধ করবেন। ভাত খেতে খেতে শুনুন। শুনতে তো ক্ষতি নেই। ভ্যাম্পায়ার আসলে ভাইরাসঘটিত এক ধরনের অসুখ।

ও, আচ্ছা।

ভাইরাসগুলি অতি দীর্ঘজীবী। এরা বিশেষ ধরনের মৃত্যুহীন ভাইরাস। মানুষের শরীরে একবার ঢুকতে পারলে তারা আর মরে না। এবং যার শরীরে তারা ঢুকেছে তাকে বাচিয়ে রাখে নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থে। মানুষ মরে গেলে তো তারাও মরে যাবে। ঠিক না?

ঠিক বলেই তো মনে হয়।

আমাদের যে রক্ত খেতে হয় তা ঐ ভাইরাসগুলির জন্যেই। রক্তটা ওদের জন্যেই দরকার।

ও।

একটা ভ্যাম্পায়ার যখন কোন মানুষের রক্ত খায় তখন ভাইরাস একজনের গায়ে থেকে অন্য জন্যের গায়ে ঢোকে। আজকাল আমরা ব্লাড ব্যাংকের রক্ত খাওয়া ধরেছি। তাই ভাইরাসজনিত সংক্রমণ অনেক কমে গেছে।

ভাল।

তবে একেবারে যে নেই তাও না। হঠাৎ হঠাৎ অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। যারা আসলে ভ্যাম্পায়ার। যেমন আজ যখন আপনাকে লালবাগের কেল্লায়। দেখলাম তখন আপনাকে ভ্যাম্পায়ার ভেবেছিলাম।

নুরুজ্জামান হতভম্ব গলায় বললেন, আমাকে ভ্যাম্পায়ার ভেবেছিলেন?

জি। আশা করি আমার কথায় আহত হননি।

নুরুজ্জমান কঠিন চোখে তাকিয়ে রইলেন। লোকটার গালে ঠাশ করে একটা চড় দিতে পারলে মনটা শান্ত হত। তিনি চড় দিলেন না, শুকনো গলায় বললেন–আমাকে আপনি ভ্যাম্পায়ার ভেবেছিলেন?

জি। আপনার চোখে সানগ্লাস ছিল। আপনি ভ্যাম্পায়ারের মত উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরছিলেন। আমরা ভ্যাম্পায়াররা উদ্দেশ্যহীন ভাবেই ঘোরাফেরা করি। আমাদের তো কোন কাজ কাম নেই। অফিসে যেতে হয় না। হা হা হা।

নুরুজ্জামান সাহেবের খাওয়া শেষ হয়েছে। তিনি আরও বিরক্ত হয়ে হাত ধুয়ে নিজের জায়গায় ফিরে এলেন। লোকটার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার। লোকটা হয় বদ্ধ উন্মাদ কিংবা অন্য কোন বদ মতলব আছে। মতলবটা কি ধরা যাচ্ছে না।

স্যারের খাওয়া তো হয়েছে। এবার আমার কাছ থেকে একটা সিগারেট নিন।

না, সিগারেট খাই না।

সিগারেট অবশ্যই খান। না খেলে সঙ্গে দেয়াশলাই রাখতেন না। আপনার। পকেটে দেয়াশলাই দেখা যাচ্ছে। ভ্যাম্পায়ারের কাছ থেকে সিগারেট নিলে ক্ষতি নেই। ভ্যাম্পায়ার ভাইরাস আপনাকে ধরবে না। এই ভাইরাস শুধুমাত্র রক্তবাহিত।

নুরুজ্জামান সিগারেট নিলেন।

স্যার, পান খাবেন? চমন বাহার দিয়ে একটা মিষ্টি পান দিতে বলি। ভাত খাবার পর পান খেলে ভাল লাগবে।

না, পান খাব না।

লোকটা নুরুজ্জামান সাহেবের দিকে একটু ঝুঁকে এসে বলল, আপনাকে একটা গোপন কথা বলি। অনেকেই আছে, তারা নিজেরা বুঝতে পারে না যে তারা ভ্যাম্পায়ার। দিব্যি মানুষের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। তখন আমরা যারা ভ্যাম্পায়ার তাদের দায়িত্ব হচ্ছে–ওদের জানানো। হয় কি জানেন, ব্লাড ট্রান্সফিউশান থেকে ভ্যাম্পায়ার ভাইরাস গায়ে ঢুকে গেল। এইডস ভাইরাসে ধুম করে লোক মরে যায়। ভ্যাম্পায়ার ভাইরাসে এ ধরনের আর মৃত্যু নেই। সেটাও এক যন্ত্রণা। দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকতে কি আর ভাল লাগে? জীবন বোরিং হয়ে যায়।

আপনি কতদিন ধরে বেঁচে আছেন?

প্রায় তিনশ বছর। লালবাগের কেল্লা এই নিয়ে পঁচাত্তর বার দেখলাম। ঠিক করেছি আরো পঁচিশ বার দেখে একশ পুরা করব। তারপর আর দেখব না।

ভ্যাম্পায়ারের লক্ষণ কি?

লক্ষণ খুব সহজ। ভ্যাম্পায়ারদের রোদে ছায়া পড়ে না।

কেন?

কেন সেটা জানি না। ছায়া পড়ে না এইটুকু জানি। স্যার, যাই, আপনার সঙ্গে কথা বলে খুব ভাল লাগল।

এরপর নুরুজ্জামান সাহেব রোদে বের হয়ে দেখেন উনারাও কোন ছায়া নেই।

No comments